পৃথিবীর বিখ্যাত জিনিয়াসদের মধ্যে একজন -ওয়াল্ট ডিজনি সম্পর্কে কিছু অজানা কথা
পুরো নাম ওয়াল্টার ইলিয়াস ডিজনি। তিনি ১ ডিসেম্বর ১৯০১ সালে আমেরিকার শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে এনিমেটর, ভয়েস এক্টর, বিনোদনকর্মী এবং ফিল্ম পরিচালক ছিলেন। তিনি আমেরিকার এনিমেটর ইন্ডাষ্টির পাইওনিয়ার হিসেবে খ্যাত। তিনি বিশ্ববিখ্যাত ডিজনি ল্যান্ড সহ ডিজনি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। এককভাবে সবচেয়ে বেশি অস্কার প্রাপ্তির রেকর্ড রয়েছে তার প্রতিষ্ঠিত ডিজনি কোম্পানির। ডিজনি কোম্পানির ছবিগুলো প্রায় ৫৯ টি নমিনেশন পেয়েছিল এবং তার মধ্যে থেকে ২৬ টি অস্কার পেয়েছিল। তিনি হেভি স্মোকার হওয়ার কারণে মাত্র ৬৫ বছর বয়সে ১৯৬৬ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। আজকে আমরা ডিজনি সম্পর্কে কিছু অবাক করা তথ্য জানবো-
হলিউডে আসা: ডিজনি তার অসুস্থ ভাইকে দেখার জন্য ১৯২৩ সালে প্রথম হলিউডে আসেন। হলিউড পৃথিবীর সকল ফিল্ম ইন্ডাষ্টির প্রাণকেন্দ্র কিন্তু সেখানে তিনি কোনো ছবি বা কার্টুন দেখার জন্য আসেন নি অসুস্থ ভাইকে দেখতে হাসপাতালে আসেন এবং তার ভাই সুস্থ হওয়ার পর তারা ২ জন মিলে চালু করেন ডিজনি ব্রাদার্স স্টুডিও।
রিভিউ: ১৯৩৭ সালে মুক্তি পায় তার “স্নো হোয়াইট” নামের কার্টুন ছবিটি তখন রিভিউ বোর্ড এর একজনের মতামত ছিলো “frankly,badly drawn”! তিনি বিশ্বের সেরা কার্টুনিস্টদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন তারপর নিন্দুকের হাত থেকে রক্ষা পান নি কিন্তু তিনি কারো কোথায় কান না দিয়ে নিজের মঠ কাজ করে যান এবং সফলতা তার কাছেই ধরা দেয়।
বৈধতা: ডিজনি একমাত্র এনিমেটর যিনি ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত একাই টেকনিকালার এ তার কার্টুন ফিল্ম তৈরির অনুমতি পেয়েছিলেন। তাদের সাথে তার একটি চুক্তি হয়েছিল যে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত তিনি একাই টেকনিকালার প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কার্টুন ছবি তৈরি করবেন। ১৯৩৫ সালের আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র হলিউড ছবিতে টেকনিকালার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতো।
অতিরিক্ত কাজ: অতিরিক্ত কাজের জন্য তিনি ১৯৩১ সালে নার্ভাস ব্র্যাকডাউন এর শিকার হন। এই মাত্রারিক্ত কাজ পাগল লোকটি দিনে ২০ ঘন্টার মতো তার স্টুডিও তে কাজ করতেন বলে অনেক এ এমন করেন। তারপর তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে সাউথ আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছিল।
থিম পার্ক: ডেনমার্ক এর একটি থিম পার্ক থেকে তিনি তার ডিজনিল্যান্ডের জন্য অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। ডেনমার্ক টিভোলি গার্ডেন পার্কের ডিজাইন তাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে তিনি তার সমস্ত ডিজনিল্যান্ড এ এত টাকাই ইনভেস্ট করেছিলেন যে বর্তমান ডিজনি কোম্পানির সকল মুভির তুলনায় তারা তাদের পার্কগুলো থেকে ২ গুণ মুনাফা আয় করে থাকে।
অস্কার: ডিজনি রেকর্ড সংখ্যক অস্কার পুরস্কার লাভ করেন মোট ৫৯ বার অস্কার নোমিনেশন প্রাপ্ত হয়ে ২৬ বার অস্কার পেয়েছিলেন তার এই রেকর্ড আজ পর্যন্ত কেউ ভাঙ্গতে পারে নি। একটি শর্ট ফিল্মের জন্য তিনি ১৯৩২ সালে প্রথম অস্কার পেয়েছিলেন।
মৃত্যু: ডিজনি ছিলেন খুবই পরিশ্রমী এবং ভদ্র চরিত্রের অধিকারী। তিনি খুব ধূমপায়ী ছিলেন যার জন্য তাকে ১৯৬৬ সালে মাত্র ৬৫ বছর বয়সে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। মৃত্যুর আগে তিনি তার সম্পদকে ৪৫%, ৪৫% এবং ১০% এ ভাগ করে গিয়েছিলেন। ৪৫% তার স্ত্রী ছেলে মেয়ের জন্য। ৪৫% তিনি দান করেছিলেন চ্যারিটিতে আর বাকী ১০% তিনি রেখে গিয়েছিলেন তার বোন এবং বোনের ছেলেমেয়ের জন্য।
ডিজনি সম্পর্কে শেষ কথা, আপনি নিশ্চয়ই জেমস ক্যামেরনের Avatar মুভিটি দেখেছেন যার নির্মাণ খরচ প্রায় ২৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর অন্যদিকে ডিজনি স্টুডিও Tangled মুভিটি ও হয়তো আপনি দেখেছেন কিন্তু আপনি জানেন কি এই মুভিটির নির্মাণ খরচ avatar এর নির্মাণ খরচ এর চেয়ে ও বেশি Tangled মুভিটির নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।